শিশুতোষ গল্প- 'মাছ ধরা'
মাছ ধরা
মো. রহমত উল্লাহ্
শিমুল আর বকুল। ভাই আর বোন। শিমুলের বয়স সাত। গায়ের রং তামাটে। সবল দেহ। মাঝারি গড়ন। বকুলের বয়স পাঁচ। গায়ের রং ফরসা। হালকা পাতলা গড়ন। হাসিখুশি মুখ। স্কুলে যায় দুজন। সবুজ ধানক্ষেত। ক্ষেতের পাশে আইল। আইল ধরে পথ। এ পথে চলে না সবাই। এটি সরু পথ। সাময়িক পথ। বর্ষা এলেই অচল। কিছুদিন স্কুলে যাওয়া-আসা। তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। তাড়াতাড়ি হাঁটছে শিমুল। তার পিছু পিছু বকুল
কী যেন চড়চড় করছে! দাঁড়ায় দুজন। খেয়াল করে। হ্যাঁ, ধানক্ষেতে। কাছেই। চড়চড়, পুটপুট। আইলে রাখে বইখাতা। ক্ষেতে নামে শিমুল। নরম কাদা। এগিয়ে যায় কিছুদূর। পানি লাগে পায়ে। বেড়ে যায় চড়চড়, পুটপুট। ফাঁক করে ধানগাছ। নিচে তাকায় শিমুল। দেখে অনেক ছোট মাছ। ওয়াও! কত মাছ। বেড়ে যায় মাছেদের ছোটাছুটি। মাছ আর মাছ। খুব কম পানি। গাদাগাদি মাছ। শুকিয়ে এসেছে ক্ষেত। এখানেই কিছুটা নিচু। এখানেই কিছুটা পানি। এতেই জমেছে মাছ।
খুব খুশি শিমুল। শুরু করে মাছ ধরা। টাকি মাছ। গুতুম মাছ। কই মাছ। শিং মাছ। টাকি মাছই বেশি। পানি কম। পালাতে পারে না মাছ। ধরা যায় সজেই। ধরে কপকপ। রাখে পকেটে। ডাকে বকুলকে। আসে বকুল। ওয়াও! কত মাছ। সেও শুরু করে ধরা। রাখে শিমুলের পকেটে। ভরে যায় পকেট। কী করবে এখন। কোথায় রাখবে মাছ। ভাবে, দুজনে। ফ্রক খোলে বকুল। গিঁঠ দেয় এক মাথা। ফ্রক হয় থলে। হা হা হা…। রাখতে থাকে মাছ। কপকপ ধরছে শিমুল। অনেক খুশি। মাছ ধরা তার শখ। আগেও ধরেছে মাছ। বাবার সঙ্গে। বড়শি দিয়ে। চাঁই দিয়ে। ঠুঁইয়া দিয়ে। এত মাছ পায়নি। আজই বেশি মাছ। যেন মাছের দিন। শিমুলের খুশির দিন। ধরছে আর ধরছে। গুনগুন করছে। মাছ ধরা খুব মজা। মাছ ধরা খুব মজা। উহু করে শিমুল। কেঁদে ওঠে হঠাৎ। ওপরে উঠায় হাত। হাতে শিং মাছ। ফুটিয়েছে কাঁটা। অনেক ব্যথা। ঝেড়ে ফেলে মাছ। ব্যথা বাড়ে। নেমে আসে চোখের জল। উহু, আহ, ইহ। কোঁকায় শিমুল। চোখ মোছে বকুল। থেমে যায় মাছ ধরা।
বাড়ি ফিরে দুজন। উঠানে রাখে মাছ। দেখে সবাই। দাদা দাদি ফুফু। সবাই খুশি। শিমুলকে দেখে না কেউ। মা আসেন। মাকে ধরে শিমুল। তার চোখে জল। খেয়াল করেন মা। হাত দেখায় শিমুল। বুঝতে পারেন মা। এটি কাঁটার ঘা। শিং মাছের কাঁটা। কঠিন ব্যথা। চোখ মোছে শিমুল। আদর করেন মা। হাত ধরেন শিমুলের। নিয়ে যান রান্নাঘরে। হাতে নেন হলুদবাটা। লাগান শিমুলের হাতে। বলেন, এমন করো না। এসব ঠিক না। স্কুলে যাওনি আজো। এভাবে আর কতদিন? মুখ খোলে শিমুল। এমন হবে না আর।<
[সংশোধিত- নভেম্বর ২০১৭]
(শিশুদের জন্য লেখা এই গল্পটির কোন শব্দে যুক্তবর্ণ নেই এবং কোন বাক্যে ৪ টির বেশি শব্দ নেই।)
0 মন্তব্য(গুলি):