কোনভাবেই গুজব ছড়াতে পারেন না কেউ বিশেষ করে শিক্ষক। ইত্তেফাক, ১০ জুন ২০২০

 পত্রিকার লিংক

কোনভাবেই গুজব ছড়াতে পারেন না কেউ বিশেষকরে শিক্ষক  

-মো. রহমত উল্লাহ্

দৈনিক ইত্তেফাক >আলোকপাত, ১০ জুন, ২০২০

>গুজব ছড়ানো রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় কোনো দিক থেকেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনো সাধারণ বিবেকবান মানুষ এটি করতে পারেন না। যারা প্রকৃত ধর্মপ্রাণ, দেশপ্রেমিক ও মানবপ্রেমিক তারাতো কখনোই এটি করবেন না। গুজব ছড়ানো বা অপপ্রচার করা মানেই মিথ্যা বলা। ইসলাম ধর্মে বলা আছে, তোমরা নিশ্চিত না হয়ে কিছুই বলবে না এবং কোনো কিছুকে এক রত্তিও কমিয়ে বা বাড়িয়ে বলবে না। অন্য সব ধর্মই সমর্থন করে এই বক্তব্য। কেননা সব ধর্মমতেই মিথ্যা বলা মহাপাপ।


অথচ অনেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রতিনিয়ত ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন বা সোসাল মিডিয়াতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চালাচ্ছে অনেক অপপ্রচার, ছড়াচ্ছে নানান গুজব। তারা অসত্ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিষয়ের ভুল বা বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি, দিচ্ছে উসকানি, তৈরি করছে অশান্তি! এসব আবার ভাইরাল করে অতি চালাকরা উপার্জন করছে অর্থ। সেগুলোকে দ্রুত লাইক ও শেয়ার দিচ্ছে তাদের গ্রুপভুক্ত সমমনারা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক পদবিধারীরাও করছে হেন কাজ! এসব দেখে হুজুগে পড়ে, তথ্যসূত্রের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত না হয়ে, গভীরভাবে চিন্তাভাবনা না করে, ভালোমন্দ বিবেচনা না করে, সেগুলোকে লাইক ও শেয়ার করে মিথ্যা তথ্য বা গুজব ছড়াচ্ছেন অনেক সাধারণ শিক্ষক।


এক্ষেত্রে অত্যন্ত সজাগ ও সতর্ক থাকা উচিত সব শিক্ষকের। ফেসবুক-মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অনলাইন বা সোসাল মিডিয়াতে যা পাওয়া যায় তার সবই অন্ধের মতো বিশ্বাস করা, লাইক করা, শেয়ার করা কোনো বিবেকবান ও দায়িত্বশীল মানুষের তথা শিক্ষকের কর্ম হতে পারে না কোনোভাবেই। একটি সঠিক সংবাদ/সার্কুলার বিকৃতভাবে বা ভিন্ন কৌশলে উপস্থাপন করে অন্যকে উসকে দেওয়া অথবা বিভ্রান্ত করাও অপরাধ। শিক্ষকের সদাই মনে রাখতে হবে, তিনি একজন শিক্ষক। তার আছে অগণিত শিক্ষার্থী। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সবচেয়ে বেশি। শুধু আইনের কাছে নয়, নিজের বিবেকের কাছেও তার জবাবদিহিতা অপরিসীম। তাই এমন কোনো কিছুকেই তিনি পোস্ট, লাইক ও শেয়ার দিতে পারেন না; যার দ্বারা সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এবং যা আইনসিদ্ধ নয়।


যিনি মনেপ্রাণে শিক্ষক তিনি কোনোভাবেই কোনো অবস্থাতেই ছড়াতে পারেন না কোনো রকম অপপ্রচার বা গুজব। অন্যভাবে বলা যায়, যিনি গুজব ছড়ান তিনি প্রকৃতপক্ষে শিক্ষকই নন। নিয়োগপত্র পেলেই, ছাত্রছাত্রী পড়ালেই, বেতন-ভাতা পেলেই শিক্ষক হওয়া যায় না, শিক্ষক হয়ে উঠতে হয়। শিক্ষকতা চাকরি নয়, মহান ব্রত। অনেক কিছু পাওয়ার মধ্যে নয়, ভালো কিছু দেওয়ার মধ্যেই শিক্ষকতার আনন্দ ও সফলতা। শিক্ষকের থাকতে হয় সর্বোচ্চ সম্মানবোধ, ন্যায়নীতিবোধ ও সতাদর্শ।


লেখক :অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা


https://www.ittefaq.com.bd/print-edition/opinion/157044/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%AC-%E0%A6%9B%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%89

Previous Post
Next Post

About Author

0 মন্তব্য(গুলি):