কবিতা সমগ্র


কবিতা সমগ্র


সূচি


[১] আলোকিত অন্ধকার


[২] ঈদ


[৩] একান্ত ব্যক্তিগত


[৪] কোন নামে ডাকবো তোমায়


[৫] কবিতা আমার


[৬] জাগ্রত হোক


[৭] তোমার বিরহে


[৮] তুলনা চলে না


[৯] ধর্ষিত


[১০] পাথর সময়


[১১] প্রাণময় প্রাণ


[১২] প্রথম দেখা


[১৩] বাংলা মায়ের ক্রন্দন


[১৪] বর্ণমালায় আমার ‘ব’ দেশ


[১৫] ভোরের প্রত্যাশায়


[১৬] মানুষ এবং পশু


[১৭] সংসার বৃত্ত


[১৮] সংসার


[১৯] স্বাধীনতা তুমি


[২০] সহজ




 



[১]


আলোকিত অন্ধকার


মো. রহমত উল্লাহ্



ঊদিত সূর্যে আলোকিত হয় না সবার পৃথিবী


যেমন কাটে না রাত স্বাধীনতা-হীনতায়।



রাতের আঁধারে অন্ধকার হয় না সবার জগত


যেমন থাকে না থেমে কবিতার পথ চলা।



চোখের আলোতেই যায় না দেখা সবকিছু


যেমন যায় না দেখা তোমার ভালোবাসা।



অনেক কিছুই দেখা যেতে পারে অন্ধ চোখে


যেমন অবিকল দেখা যায় মায়ের মুখ।



জন্মভূমিতে আর থাকে না অন্ধকার


যখন আলোকিত হয় সন্তানের মন।#


-----------------



[২]


ঈদ


মো. রহমত উল্লাহ্



ঈদের চাঁদের মত বাঁকা


বিবেকের ঘুর্ণিপাকে বন্দি


আধা মধ্যবিত্ত মানুষের


স্বপ্নভঙ্গুর ললাটে আঁকা!#


-------------



[৩]


একান্ত ব্যক্তিগত


মো. রহমত উল্লাহ্ (রানা ইশতিয়াক)


কিছু কিছু ব্যক্তিগত কথা-


থাকা ভালো ব্যক্তিগত কিছু কাজ;


কিছু কিছু মতামত ভালো-


একান্ত প্রিয় কিছু ব্যক্তিত্ব।



গল্প কবিতা ও পরিবেশ


গুনগুনিয়ে গাওয়ার গান


নিজস্ব কিছু স্টাইল ভালো-


আলাদা রকমের পছন্দ;


মনে মনে কিছু অহঙ্কার


পৃথক ভঙ্গির অভিমান


একটু অন্য রকমের বাঁচা-


আরো ভালো অমর মরন!#



[ছন্দ- অক্ষর বৃত্ত, পর্ব- ১০ মাত্রা।]


[২০০৩, পলাশ, নরসিংদী]


-------------



[৪]


কোন নামে ডাকবো তোমায়


মো. রহমত উল্লাহ্ (রানা ইশতিয়াক)



টইটম্বুর নদীর মতই


পরিপূর্ণ যৌবন তোমার


বৃষ্টিস্নাত যুগল গোলাপ


ফুটে আছে রেশম ছাপিয়ে।



অদূরে দাঁড়ালে মনে হয়


শাপলা ফুটা সকালের দীঘি


উষ্ণতা পেলেই মনোমেঘ


ঝরে পড়ে অঝর ধারায়।



টেলিফোনে কোকিলের গান


রাঙা ঠোঁটে হাসে কৃষ্ণচূড়া


এলোচুলে হার মানে মেঘ।



কোন নামে ডাকবো তোমায়


ঋতুরাণী, বর্ষা, না কি


ঋতুরাজ বসন্তই?#



[২২ সেপ্টেম্বর ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী]



-------------



[৫]


কবিতা আমার


মো. রহমত উল্লাহ্ (রানা ইশতিয়াক)



কবিতা আমার


প্রিয়ার কপোলে গাঢ় কালো তিল,


এলোচুলে দোলা, লাল ঠোঁটে হাসি!


কবিতা আমার


ঊর্বর ভূমি, লাঙলের ফলা,


সোনালি ফসল, বাংলার চাষি।


কবিতা আমার


ছেলেহারা মা’র শান্তনা বাণী;


শুকনো মাটিতে বৃষ্টি যেমন!


কবিতা আমার


দুরন্ত শিশু, উড়ন্ত পাখি,


কাঙ্ক্ষিত ভোর, মুক্ত কানন!


কবিতা আমার


ভয়হীন রাত, পূর্ণিমা চাঁদ,


গভীর ঘুমের ছোঁয়া দেয়া পরি!


কবিতা আমার


নৌকার পাল, বিমানের পাখা,


স্বপ্ন দেখার লাল রঙ ঘুড়ি!


কবিতা আমার


দীঘির পানিতে শাপলার হাসি,


সবুজের ভীড়ে দোয়েলের গান!


কবিতা আমার


স্বর্ণের খনি, মুক্তার ঝিনুক,


প্রাণের অধিক প্রাণময় প্রাণ!


কতিা আমার


স্পন্দিত বুকে জয়ের চেতনা,


শত্রু হননের বুলেট-বারুদ!


কবিতা আমার


শেকল ভাঙার শক্ত হাতুড়ি,


আঁধার তাড়ানো সকালের রোদ!


কবিতা আমার


স্বাধীন হবার মুক্তি মন্ত্র,


পতাকা তোলার সবল ঐক্য!


কবিতা আমার


প্রগতির পথ- চির অম্লান,


সত্য- সুন্দর- অমর বাক্য!#



[প্রথম লেখার তারিখ ও স্থান: ১৭ জুন ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী।]


পরিমার্জিত- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।


------------



[৬]


জাগ্রত হোক


মো. রহমত উল্লাহ্ (রানা ইশতিয়াক)


জাগ্রত হোক- সেই জনতা,


একাত্তরের মূল একতা,


সত্যিকারের মানবতা।


পূর্ণতা পাক- স্বাধীনতা,


জয়বাংলা’র ব্যাপকতা,


লক্ষ প্রাণের স্বার্থকতা।#



[২৬ মার্চ ২০০৯, মিরপুর, ঢাকা]


--------------



[৭]


তোমার বিরহে


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



তোমার বিরহে


বিলুপ্ত যেনো সূর্যের হাসি


ভার হয়ে আছে আকাসের বুক


অবিরাম কাঁদে আকাশের মেঘ।



তোমার বিরহে


নাচেনা ফড়িং ঘাসের ডগায়


চুমেনা প্রেমিক প্রজাপতি ফুলে


প্রাণ খুলে গান করেনা পাখিরা।



তোমার বিরহে আসে এ বর্ষা


সবখানে কাঁদে আমার হৃদয়!



[২২ জুন ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী]



--------------



[৮]


তুলনা চলে না


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



মানুষেরা লুটে মানুষের ধন


পশুরা লুটে না।


স্বজাতিরে খুন মানুষেরা করে


পশুরা করে না।


প্রিয়জন ভাঙে আশা ভরা বুক


পশুরা ভাঙে না।


মানুষে মানুষ করে ধর্ষণ


পশুরা করে না।  


একে অপরের স্বাধীনতা কাড়ে


পশুরা কাড়ে না।


মানুষেরা মনে বিদ্ধেষ পুষে


পশুরা পুষে না।...


এসব মানুষ এমন মানুষ


পশুর সাথেও তুলনা চলে না!#


[০৭ জুলাই ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী।]


-----------------



[৯]


ধর্ষিত


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)


নিত্য ধর্ষিত মা


বোন বধু প্রিয়তমা...


ধর্ষিত মানবতা!


নিস্পাপ শিশু যেনো


রক্তাক্ত পোলাপ!



‘না’ আর্ত চিৎকার


ধ্বনিত বিশ্বময়!



ধর্ষক উল্লাসে


কী বিষাক্ত বাতাস,


উলঙ্গের নৃত্যে


প্রকম্পিত পৃথিবী,


ধর্ষণ সংবাদে


বিক্ষত মা'র ভাষা!


[১৩ মার্চ ২০০২, পলাশ, নরসিংদী]


-------------



[১০]


পাথর সময়


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)


জীবন সম্পদ সময় সম্ভ্রম


গোখরোর ফনায়!


হার মানে পশু এ বর্বরতায়!



করাত কলের পিচ্ছিল টেবিলে


কাঁদে মানবতা!


কোথায় মানব, কোথায় মানবতা?


[০৭ মে ২০০২, পলাশ, নরসিংদী]


--------------



[১১]


প্রাণময় প্রাণ


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



গভীর রাতে থেমে গেলে ধরা


আর কোনদিন হবেনা সকাল



প্রাণের প্রগতি ফুরালে হবেনা


বিকশিত এই সূর্যের আলো



সাঙ্গ হবেই মাছেদের খেলা


বরফ কঠিন হয়ে গেলে পানি।



শান্তি শান্তি মুখে মুখে বলে


শান্তি ধ্বংসে ব্যস্ত সবাই!



মারণাস্ত্র ধারী পশুদের বুকে


নিশ্চই নেই প্রাণময় প্রাণ!



প্রাণের পরশে-


মরুভূমে জমে সবুজের মেলা


দৃষ্টি- কবিতা, পাথর- পুষ্প,


কথা হয় গান।



মানুষের চাই মানবতা ভরা


প্রাণময় প্রাণ।


[০৭ জুন ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী]


-----------------



[১২]


প্রথম দেখা


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)


বিনা মেঘে বিজলি ছোঁয়া


দু'জনারই চোখে চোখে


কাউকেই না বলা কথা


হয়ে গেলো এক পলকে!



প্রখর দুপুরে হলো


শুভ্র সকালের সূচণা


নিরবে পাল্টে গেলো


গদ্য জীবনের রচনা।



খুললেই যদি মনের দুয়ার


দিবেনা মন্ত্র পা বাড়াবার?


[২৫ মে ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী]


---------------



[১৩]


বাংলা মায়ের ক্রন্দন


মো. রহমত উল্লাহ্



তোমাদের সীমা হীন লোভের আগুনে আর কতদিন দগ্ধ হবে


আমার সুদক্ষ সন্তানের রক্তে ঘামা শরীর?


তোমাদের সীমা হীন লোভের পাথরে আর কতদিন চ্যাপ্টা হবে


আমার সুণিপুন সন্তানের স্বপ্ন আর দেহ-মন?


তোমাদের সীমা হীন লোভের খাঁচায় আর কতদিন বন্দি রবে


আমার কর্মঠ সন্তানের সুখ আর সচ্ছলতা?


তোমাদের সীমা হীন নীতি-হীনতায় আর কতদিন ঘুরনি খাবে


আমার নির্দোষ সন্তানের জীবনের ন্যায্য দাবি?



জবাব দাও-


তোমাদের সীমা হীন বর্বরতায়:


আর কতটুকু শূন্য হবে আমার বুক,


আর কতটুকু মলিন হবে আমার মুখ?



বলো-


কে হতে চায়


তোমাদের মতো কলঙ্কিত সন্তানের মাতা।


-----------------



[১৪]


বর্ণমালায় আমার ‘ব’ দেশ


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



এই রূপসী বাংলায় নিত্য ছুঁয়ে যায়


শতকিয়া-বর্ণমালায় আমার হৃদয়:


১  দিয়ে ধান কাটে কর্মঠ কৃষক


স্বপ্ন ধরে রাখে শিশু  ৫  এর ভিতর


৭  এ ভর দিয়ে দিয়ে হাঁটে বৃদ্ধ বাবা


উঁচিয়ে  ৯  এর লেজ কাঠবিড়ালি ছুটে।


উপরে উঠার বাঁশে অনেক   া


হয়েছে  ি   কলাপাতা নুয়ে


ী  বধুর ঘুমটার কাপড়,


এ  হয়ে মাধুরে বসে তসবি জপে দাদি


বিদেশে রপ্তানি হয় মুন্ডুহীন  ঔ ।


খোকির কালো সুতায় জুলে আছে  ঙ


গ্লাসে ঢেলে  জ  ’র জল পিপাসা মিটাই


ঠ  দিয়ে কাটে কামরাঙা পাতারং টিয়ে,


মাঝি ধরে ভাটিয়ালি উড়িয়ে লাল  প


ম তে মধু করে সঞ্চয় মৌমাছিরা মিলে


ঈদের আনন্দ করি    ঁ  দেখে


চোখের  ঃ  ফোঁটা ঝরে দুঃখদিনে


ং  ঢং ঢং  বিদায় বেলায়-


ছেড়ে যেতে চায় না মন  ‘ব’  দেশ আমার!



[০৭ ফেব্রুয়ারি ২০০২, পলাশ, নরসিংদী।]  


-------------




[১৫]


ভোরের প্রত্যাশায়


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



আঁধার রাত যেনো আকাশের সীমানা;


অতিক্রমের আশায় প্রতিবন্ধক দৌঁড়...



কাংখিত ভোরের প্রত্যাশায়-


জীবন দিলেন আমাদের পূর্ব পুরুষ!


তাঁদের রক্ত লালে কাটলো না আঁধার


এখনো এলো না পাখি ডাকা ভোর।



পুবের আকাশে ঝুলে আছে


হায়েনার হাতের ছায়া!


কীভাবে আসবে সোনালি সকাল?#



[১৩ এপ্রিল ২০১৩, মোহাম্মদপুর, ঢাকা]



--------------




[১৬]


মানুষ এবং পশু


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



মানুষেরা লুটে মানুষের ধন


পশুরা কি লুটে?


স্বজাতিরে খুন মানুষেরা করে


পশুরা কি করে?


প্রিয়জন ভাঙে আশা ভরা বুক


পশুরা কি ভাঙে?


মানুষে মানুষ করে ধর্ষণ


পশুরা কি করে?


একে অপরের স্বাধীনতা কাড়ে


পশুরা কি কাড়ে?


মানুষেরা মনে বিদ্ধেষ পুষে


পশুরা কি পুষে?


এসব মানুষ এমন মানুষ


পশুরাও হরে! #


[২৩ ডিসেম্বর ২০১২, মোহাম্মদদপুর, ঢাকা।]


----------




[১৭]


সংসার বৃত্ত


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)


প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে


একই ছাদের নিচে


আজীবন ঝুলে আছে


ইলেক্ট্রিক্যাল ফ্যান।



আমিও ঘুরে ফিরে


সেই একই বৃত্তে-


শৈশব কৈশোর


যৌবন দেহ-মন...!


মিথ্যে মায়ার জালে


জেনে শুনে ঘুরপাক;


মাকড়সার যেমন


স্বরচিত জালেতেই


হয় জীবন মরণ!#


১২ জুন ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী।


-----------



[১৮]


সংসার


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)


বজ্রপাত, শিলাপাত, বৃষ্টিপাত;


শেষে কেটে গেলে দৈনন্দিন মেঘ


সংসার আকাশে উঁকি মারে চাঁদ!



বৈরাগী জানে না কী যে তার স্বাধ।#



[২০০৪, পলাশ, নরসিংদী।]


-------------



[১৯]


স্বাধীনতা তুমি


মো. রহমত উল্লাহ্


স্বাধীনতা তুমি


মায়ের ভাষায় কবিতা লেখার স্বাধীনতা।


স্বাধীনতা তুমি


নিজের উঠানে অমল বায়ুর স্বাধীনতা।


স্বাধীনতা তুমি


শুদ্ধ পানিতে চুমুক দেবার স্বাধীনতা।


স্বাধীনতা তুমি


আপনার পায়ে উপরে উঠার স্বাধীনতা।


স্বাধীনতা তুমি


অভাব প্রভাব মুক্ত থাকার স্বাধীনতা।


স্বাধীনতা তুমি


দেশের ভালো আগলে রাখার স্বাধীনতা।


স্বাধীনতা তুমি


মিথ্যা মাড়িয়ে সত্য জয়ের স্বাধীনতা।#



[ছন্দ- মাত্রবৃত্ত, পর্ব- ৬ ও ৪ মাত্রা।]


[১৩ মার্চ ২০০৭, মিরপুর, ঢাকা।]


------------



[২০]


সহজ


মো. রহমত উল্লাহ্‌ (রানা ইশতিয়াক)



নদীর বুকেতে সাগর


সাগরের বুকেতে নদী



বাতাসের ভিতরে প্রাণী


প্রাণীর ভিতরে বাতাস



কবির হৃদয়ে কবিতা


কবিতার হৃদয়ে কবি...



এমন যখন দু'জন


সহজ তখন সবই।



[১৯ মে ২০০৩, পলাশ, নরসিংদী]


----------


 


Previous Post
Next Post

0 মন্তব্য(গুলি):