শিশুপাঠ্য গল্প- 'মিলেমিশে থাকব সবাই' -ফুলকি- জানুয়ারি ২০১৭

_IMG_000000_000000

About Time Period and Front, Behind
মিলেমিশে থাকবো সবাই
মো. রহমত উল্লাহ্,
>কুমির, জিরাফ, ময়ূর। তিনজনে মিলে একসাথে। আসে শিয়ালের বাসায়। বার বার ডাকে শিয়ালকে। শিয়াল ভাই। শিয়াল ভাই। শিয়াল ভাই। বেরিয়ে আসে শিয়াল। ইয়া বড় লেজ। দাঁড়ায় সবার সামনে। বলে, কী ব্যাপার? তোমরা এসেছো কেনো?
তিনজনে কথা বলে একসাথে। তুমি ঘুমের সময় হু হুয়া করো। আমরা ঘুমাতে পারিনা। রাত ১০ টায় হু হুয়া করো। ১২ টায় হু হুয়া করো। ভোর ৫ টায় হু হুয়া করো। ঘুমের খুব অসুবিধা হয়। এসব ডাকাডাকি থামাও। নইলে সিংহ রাজাকে বলবো। শিয়াল ভাবে। তাদের অভিযোগ সঠিক। কী করা যায়।

শিয়াল এগিয়ে আসে তাদের কাছে। তাকায় জিরাফের দিকে। কথা বলে নরম করে। জানতে চায় কাছে গিয়ে। তুমি কখন ডাকো, জিরাফ ভাই? জিরাফ বলে, আমি ডাকি না। দিনেও ডাকি না। রাতেও ডাকি না। কখনো ডাকি না।

এবার কুমিরের দিকে তাকায় শিয়াল। বলে, তুমি কখন ডাকো, কুমির ভাই? কুমির বলে, আমি পানিতে থাকি। তোমাদের মতো ডাকাডাকি করিনা। কারো ঘুমের অসুবিধা করিনা।
এবার ময়ূরের দিকে তাকায় শিয়াল। বলে, তুমি কখন ডাক, ময়ূর ভাই? ময়ূর বলে, আমি ভোরে ডাকি। সকালে দুপুরে বিকালে ডাকি। ঘুমের সময় ডাকিনা। ঘুমের সময় ঘুমাই।

শিয়াল ভাবে। তাদের কথা সঠিক। কী করা যায় এখন। কী করা যায়। তাকায় সবার দিকে। বলে, সবাই আমার সাথে এসো। লাইন ধরে হাঁটে সবাই। শিয়াল সবার সামনে। সবাই শিয়ালের পিছনে।

শিয়াল আসে হাতির বাসায়। কাছে গিয়ে জানতে চায়। তুমি কখন ডাকো, হাতি ভাই? হাতি বলে, সঠিক সময় নেই। সকালে ডাকি। দুপুরে ডাকি। বিকালে ডাকি। রাতেও ডাকি মাঝে মাঝে। শিয়াল বলে, ঠিক আছে। তুমিও এসো আমাদের সাথে।

ডান দিকে হাঁটা দেয় শিয়াল। তাকায় সবার দিকে। বলে, সবাই আমার সাথে এসো। লাইন ধরে হাঁটে সবাই। শিয়াল সবার সামনে। সবাই শিয়ালের পিছনে।

এবার শিয়াল আসে ছাগলের বাসায়। কাছে গিয়ে জানতে চায়। তুমি কখন ডাকো, ছাগল ভাই? ছাগল বলে, আমার কোনো ঠিক নেই। সকাল, দুপুর, বিকাল, রাত বিরাত। যখন তখন ডাকি। শিয়াল বলে, ঠিক আছে। তুমিও এসো আমাদের সাথে।
বাম দিকে হাঁটা দেয় শিয়াল। তাকায় সবার দিকে। বলে, সবাই আমার সাথে এসো। লাইন ধরে হাঁটে সবাই। শিয়াল সবার সামনে। সবাই শিয়ালের পিছনে।

এবার শিয়াল আসে মহিসের বাসায়। কাছে গিয়ে জানতে চায়। তুমি কখন ডাকো, মহিস ভাই? মহিস বলে, আমার কোন ঠিক নেই। সকালে দুপুরে বিকালে। যখন মন চায় ডাকি। রাতে ঘুমাই। ঘুমের সময় ডাকিনা। শিয়াল বলে, ঠিক আছে। তুমিও এসো আমাদের সাথে।

আবার ডান দিকে হাঁটা দেয় শিয়াল। তাকায় সবার দিকে। বলে, সবাই আমার সাথে এসো। লাইন ধরে হাঁটে সবাই। শিয়াল সবার সামনে। সবাই শিয়ালের পিছনে।

এবার শিয়াল আসে কোকিলের বাসায়। কাছে গিয়ে জানতে চায়। তুমি কখন ডাকো, কোকিল ভাই? কোকিল বলে, আমি গানের পাখি। সব সময় গান গাই। সকাল, দুপুর, বিকাল, রাত বিরাত। রাত ১০ টায়, ১২ টায়। ভোর ৫ টায়। রাতেই বেশি গান গাই। শিয়াল বলে, ঠিক আছে। তুমিও এসো আমাদের সাথে।

নিজের বাসার দিকে হাঁটা দেয় শিয়াল। তাকায় সবার দিকে। বলে, সবাই আমার সাথে এসো। লাইন ধরে হাঁটে সবাই। শিয়াল সবার সামনে। সবাই শিয়ালের পিছনে। হাতির পিঠে ময়ূর, কোকিল।

শিয়াল ফিরে আসে বাসার কাছে। তাকায় সবার দিকে। বলে, এবার শুনলেতো। একেক জন একেক সময় ডাকে। আমি দিনে ঘুমাই, রাতে ডাকি। জিরাফ বলে, রাতে ঘুমাওনা কেনো? শিয়াল বলে, কী করবো বলো। রাতে খাবার খোঁজতে হয়। দিনে বাইরে আসতে পারিনা। মানুষেরা আমাদের মারে। তাই রাতে বেরোই। একেক জন যাই একেক দিকে। খাবার খোঁজি। খাবার পেলেই ডাকি। সবাইকে ডাকি। তারাও ডাকে। যা পাই, মিলেমিশে খাই।
সবাই ভাবে, শিয়ালেরা অনেক ভালো। সবার দিকে তাকায় ময়ূর। বলে, বিবাদ বাদ দাও ভাই। চলো, সবাই মিলেমিশে থাকি। সবাই বলে, তবে তাই হোক।<
[ছোটদের জন্য লেখা যুক্তবর্ণ বিহীন এই গল্পটির কোন বাক্যে ছয়টির বেশি শব্দ নেই।]
মো. রহমত উল্লাহ্‌ : অধ্যক্ষ- কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। ২৮ মার্চ ২০১৬
Previous Post
Next Post

0 মন্তব্য(গুলি):