সম্ভাবনাময় স্কুল ব্যাংকিং


                  ঢাকা 4 জানুয়ারি ২০১৩, 21 পৌষ ১৪১৯, 21 সফর ১৪৩৪
সম্ভাবনাময় স্কুলব্যাংকিং
মো. রহমতউল্লাহ্
অগ্রগতির নিয়ামকগুলোরমধ্যে সঞ্চয়অত্যন্ত গুরুত্ববহ।যাদের সঞ্চয়প্রবণতা যতবেশি, তাদেরইঅগ্রগতি ত্বরান্বিতহওয়ার বাস্তবসম্ভাবনাও ততবেশি। ছোটবেলাথেকে এইবিশেষ গুণটিকোনো মানুষেরমনের মধ্যেপ্রথিত হলেসারাজীবনই এরসুফল লাভকরা যায়।আমাদের স্কুলেরশিক্ষার্থীদের সঞ্চয়প্রবণতা বৃদ্ধিরলক্ষ্যে বাংলাদেশব্যাংক ২০১০সালের নভেম্বরমাসে একটিসার্কুলার জারিকরে। স্কুলেরশিক্ষার্থীরা নিজনামে ব্যাংকেঅ্যাকাউন্ট ওপেনকরতে পারবে।এই সার্কুলারবাস্তবায়নে এগিয়েআসে বিভিন্নবেসরকারি সরকারি ব্যাংক।বাংলাদেশ ব্যাংকেরসার্কুলার অনুসারেস্কুল ব্যাংকিংবা স্টুডেন্টব্যাংকিংয়ের আওতায়ইয়ং স্টার’, ‘ফিউচার স্টারইত্যাদি উদ্দীপনাসূচকনামে ব্যাংকগুলোচালু করেআকর্ষণীয় স্কিম।অত্যন্ত সহজশর্তেওপেন করাশুরু হয়শিক্ষার্থীদের নিজেরনামে ব্যাংকঅ্যাকাউন্ট।
এইস্কিমের আওতায়যে কোনোশিক্ষার্থী এককপি ছবি, স্কুলের আইডিকার্ড নামমাত্র টাকাদিয়ে যেকোনো ব্যাংকেরযে কোনোশাখায় ওপেনকরতে পারেসেভিংস ব্যাংকঅ্যাকাউন্ট বাসঞ্চয়ী হিসাব।যে কোনোঅপ্রাপ্ত বয়সেরশিক্ষার্থী মাত্র-১০টাকা জমাদিয়ে শুরুকরতে পারেতার সঞ্চয়ীহিসাব। এইহিসাবে টাকাজমা করা-না করারকোনো বাধ্যবাধকতানেই। সপ্তাহের/মাসের/বছরেরযে কোনোএক বাএকাধিক দিনতার হিসাবেজমা করতেপারবে যেকোনো পরিমাণটাকা। এইহিসাব পরিচালনারজন্য কোনোরূপচার্জ নেয়না ব্যাংক।জমাকৃত টাকারওপর শিক্ষর্থীরাপেয়ে থাকেসর্বাধিক হারেমুনাফা বাইন্টারেস্ট। তদুপরিব্যাংকভেদে শিক্ষার্থীরাবিনামূল্যে বানামমাত্র মূল্যেপেয়ে থাকেজমাবই, চেকবই, ডেবিটকার্ড, মোবাইলব্যাংকিং ইত্যাদিসুবিধা। এইহিসাবের মাধ্যমেশিক্ষার্থীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধ করতেপারে তাদেরস্কুল-কলেজেরবেতন-ফি।এছাড়াও সংশ্লিষ্টশিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষারজন্য প্রয়োজনেব্যাংক থেকেসহজশর্তে নিতেপারে শিক্ষাঙ্গন।  বর্তমানে আমাদেরদেশে ৪০টিরওবেশি ব্যাংকেচালু রয়েছেএই স্টুডেন্টব্যাংকিং স্কিম।এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সরকারি ব্যাংকেরচেয়ে অনেকদূর এগিয়েআছে প্রাইভেটব্যাংকগুলো। ফলেগ্রামের তুলনায়এগিয়ে আছেশহরের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা নিজেরপ্রতিষ্ঠান থেকেইওপেন করতেপারে ব্যাংকহিসাব এবংপ্রতিমাসে জমাকরতে পারেতাদের সাধ্যমতোঅনির্ধারিত যেকোনো পরিমাণটাকা। আমারজানামতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যক্ষসহযোগিতায় উৎসাহে এবংশিক্ষকদের সহায়তায়ঢাকা শহরেরমোহাম্মদপুরে অবস্থিতএকটি বালিকাবিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরামাত্র ১৫দিনে একটিপ্রাইভেট ব্যাংকেওপেন করেছেপ্রায় পাঁচশসঞ্চয়ী হিসাব।পত্রিকান্তরে জানাযায়, ছোট্টছোট্ট শিক্ষার্থীরসঞ্চয়ের পরিমাণবর্তমানে প্রায়৭২ কোটিটাকারও অধিক।এই টাকারঅঙ্কটি উৎসাহব্যঞ্জকহলেও ২০১০সালের নভেম্বরেসার্কুলার জারিরপর থেকেহিসাব করাহলে সময়েরহিসাব আমাদের শিক্ষার্থীরসংখ্যাগত দিকবিবেচনায় সঞ্চয়েরএই পরিমাণটিমোটেও পরিতৃপ্তহওয়ার মতোনয়। কেননাশিক্ষা মন্ত্রণালয়েরহিসাব অনুসারেবর্তমানে আমাদেরদেশে প্রাথমিকস্তরের স্কুলগুলোতে কোটি৬২ লাখ২৫ হাজার৬৫৮ জন, মাধ্যমিক স্তরেরস্কুলগুলোতে ৭৩লাখ ৯৮হাজার ৫৫২জন, উচ্চমাধ্যমিক কলেজগুলোতে লাখ১৬৬ জন, দাখিল মাদ্রাসাগুলোতে ২২ লাখ৩৬ হাজার২৫ জন, আলিম মাদ্রাসাগুলোতে লাখ৫০ হাজার৮১৩ জন, টেকনিক্যাল ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানগুলোতে লাখ৪১ হাজার৩৩৬ জনসহমোট কোটি ৬৮লাখ ৫২হাজার ৫৫০জন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীবিদ্যমান। এরাসবাই গড়েদৈনিক মাত্র টাকাকরে ব্যাংকেজমা করলেওএকদিনে ব্যাংকেজমা হবে কোটি৬৮ লাখ৫২ হাজার৫৫০ টাকা।মাসে জমাহবে ৮০কোটি ৫৫লাখ ৭৬হাজার ৫০০টাকা। বছরেজমা হবে৯৬৬ কোটি৬৯ লাখ১৮ হাজারটাকা। ১০বছরে জমাহবে প্রায়১০ হাজারকোটি টাকা।এই টাকাআমাদের জাতীয়উন্নয়নে বিশেষকরে শিক্ষাখাতের উন্নয়নেঅত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভূমিকা রাখতেসক্ষম হবেএতে কোনোসন্দেহ নেই।অতি সহজেইশিক্ষার্থীদের এইরূপসঞ্চয়ী হিসাবেরটাকাগুলো অন্যান্যসঞ্চয়ী হিসাবেরচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে নিশ্চিন্তেবিনিয়োগ করাসম্ভব। কেননাএকবার সঞ্চয়েরসুব্যবস্থা মন-মানসিকতাতৈরি করেদিতে পারলেশিক্ষার্থীরা সাধারণত১০-১৫বছরের শিক্ষাজীবনেসাধ্যমতো টাকাব্যাংকে জমাকরবে। কেবলপ্রয়োজন তাদেরজাগিয়ে দেয়া। জন্যপ্রথমেই এগিয়েআসতে হবেশিক্ষকদের। একজনভালো শিক্ষকেরপরামর্শ অভিভাবকরাওমান্য করেনঅত্যন্ত আগ্রহসহকারে।শিক্ষকরা আন্তরিকভাবেসক্রিয় ভূমিকাপালন করলেশিক্ষার্থীদের দিয়েযে কোনোভালো কাজ, বড় কাজ, জাতীয় কাজঅতি সহজেইসম্পন্ন করাতেপারেন। আমাদেরদেশের প্রত্যন্তঅঞ্চলে যেহেতুএখনো বেসরকারিব্যাংকগুলোর শাখাততটা বিস্তৃতনয়; সেহেতুবেসরকারি ব্যাংকেরচেয়ে বেশিভূমিকা রাখতেহবে সরকারিব্যাংকগুলোকে। বিভিন্নপ্রণোদনার মাধ্যমেউৎসাহিত করতেহবে শিক্ষার্থীদের। বাংলাদেশ ব্যাংককেওহতে হবেআরো সক্রিয়।শুধু একটিসার্কুলার দিয়েবসে থাকলেইচলবে না।ব্যবস্থা করতেহবে নিয়মিততদারকির। ব্যাংকগুলোকেআনতে হবেজবাবদিহিতার আওতায়।সরকারি ব্যাংকগুলোরশাখা পর্যায়েস্কুল ব্যাংকিংয়েরমতো কার্যক্রমপাশ কাটানোরপ্রবণতাই বেশিপরিলক্ষিত। স্কুলব্যাংকিং সফলকরার জন্যসবচেয়ে দ্রুতকার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ করতেপারে শিক্ষামন্ত্রণালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জারিকরা যেতেপারে স্কুলব্যাংকিং চালুকরার আদেশ

Previous Post
Next Post

0 মন্তব্য(গুলি):