প্রবন্ধ - নিশ্চিত করতে হবে শিক্ষক প্রশিক্ষণের কাংখিত সুফল। ইত্তেফাক, ২২ অক্টোবর, ২০১২


 

প্রবন্ধ - শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগে বিবেচ্য। সমকাল, ১০ জুন, ২০১৯


 

প্রবন্ধ - বই উৎসবের বাস্তবতা ও আমাদের করণীয়। ভোরের কাগজ, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯


 

ফিচার- ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ: অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রসঙ্গে। ভোরের কাগজ, ০১ জুন ২০১৯


 

প্রবন্ধ - নারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। নরসিংদীর কথা, ১৯ মার্চ ২০০৩



 

সংবাদ - বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি প্রসঙ্গ। ইত্তেফাক, ৮ নভেম্বর ২০১৯


 

প্রবন্ধ - শিক্ষা পরামর্শ, ইত্তেফাক, ১০ নভেম্বর,২০১৯


 

প্রবন্ধ - কেমন হবেন শিক্ষক, ভোরের কাগজ, ৫ অক্টোবর,২০২০


 

সংবাদ- অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রসঙ্গে, ভোরের কাগজ, ১ জুন, ২০১৯


 

সংবাদ - শিশুর বিকাশে চাই সমন্বিত উদ্যোগ। সাপ্তাহিক প্রতিচিত্র, ২৩ জুন ২০১৭


 

শিশুতোষ গল্প: মার্বেল। যায়যায়দিন, ১৬ জুন ২০১৬


 

প্রবন্ধ - উচ্চমাধ্যমিক স্তরের লাখ লাখ ফাকা আসন। দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ অক্টোবর ২০২০


 

উচ্চমাধ্যমিক স্তরের লাখ ফাঁকা আসন

দৈনিক ইত্তেফাক। প্রিন্ট সংস্করণ, ১০ অক্টোবর, ২০২০ | পাঠের সময় : ২.৯ মিনিট

উচ্চমাধ্যমিক স্তরের লাখ লাখ ফাঁকা আসন
মো. রহমত উল্লাহ্

একাধিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির যোগ্য সাড়ে ৭ হাজার কলেজ ও মাদ্রাসার মধ্যে ১৪৮টি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য এবার কেউ আবেদন করেনি। কাম্যসংখ্যক আবেদন পায়নি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হবে সহস্রাধিক। এটি নিশ্চয়ই শিক্ষাক্ষেত্রের একটি বড় দুঃসংবাদ! চলতি ২০২০ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কলেজ-মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রথম ধাপে আবেদন করেছে ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৭১৩ জন। এর বিপরীতে ভর্তির জন্য আসন রয়েছে ২১-২২ লাখ। এই হিসাবে এবার একাদশ শ্রেণিতে ফাঁকা থাকবে ৮ লক্ষাধিক আসন! এমনটি যে শুধু এবারই ঘটছে তা কিন্তু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে এই পরিকল্পনাহীন দুরবস্থা! অপ্রয়োজনীয় আসন কমানোর তাগিদ দিয়ে গত ২০১৬ সালে একই ইস্যুতে যখন আমি লিখেছিলাম তখনো একাদশ শ্রেণিতে ফাঁকা ছিল ৭ লক্ষাধিক আসন। কিন্তু গা করেনি কেউ! ফাঁকা আসন কমানো তো দূরের কথা; বরং বাড়িয়ে অতিরিক্তের ওপর আরো অতিরিক্ত করা হয়েছে ১ লাখ! ফাঁকা আসনের এই হিসাব একটু লম্বা করা হলে দেখা যাবে, এখন যারা দ্বাদশ শ্রেণিতে আছে তাদের সময়েও ফাঁকা ছিল কমবেশি ৮ লাখ আসন, যা এখনো বিদ্যমান। তাহলে দেখা যাচ্ছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ফাঁকা বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসন প্রায় ১৬ লাখ! কী অস্বাভাবিক চিত্র!

শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা গর্ব করে বলছেন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আসন সংকট নেই। অথচ প্রয়োজনের অতিরিক্ত এই লাখ লাখ আসন ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং এদের পেছনে যে ক্রমবর্ধমান হারে মোটা অঙ্কের টাকা প্রতি অর্থবছরে ব্যয় হচ্ছে, তা নিয়ে যেন কারো কোনো মাথাব্যথাই নেই! মোট আসনের এক-তৃতীয়াংশ প্রতি বছর ফাঁকা বা অতিরিক্ত থাকার অর্থ দাঁড়াচ্ছে এ খাতে বার্ষিক মোট ব্যয়ের তিন ভাগের এক ভাগই অপ্রয়োজনীয়। অপরদিকে এ স্তরে বিদ্যমান শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের তিন ভাগের এক ভাগই প্রয়োজনের অতিরিক্ত, যা শিক্ষার এই স্তর জাতীয়করণের চরম অন্তরায়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পরিকল্পনাহীনভাবে সিট-শাখা ও কলেজ-মাদ্রাসা বাড়িয়ে কেন এত এত ফাঁকা আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে ও হচ্ছে? এই পরিস্থিতিতে দেশের সব উচ্চমাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান কাম্য শিক্ষার্থী না পাওয়াটাই তো স্বাভাবিক। প্রশাসন একদিকে লাখ লাখ অতিরিক্ত আসন সৃষ্টি করবে এবং অপর দিকে দেশের প্রায় সব কলেজ-মাদ্রাসায় কাম্য শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য তাগাদা দেবে, তা কী করে হয়?

একটা উদাহরণ দিই। ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুরে তো বিশেষায়িত ও এমপিওভুক্ত কলেজ-মাদ্রাসার কোনো অভাব ছিল না। অথচ এই মোহাম্মদপুরেই অনুমোদন দেওয়া হলো মাইল স্টোন ও ক্যাব্রিয়ান কলেজের শাখাসহ আরো অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান। এত এত সরকারি কলেজ, মডেল কলেজ, মিশন কলেজ, স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিশেষ কলেজ, প্রাইভেট কলেজ, কারিগরি কলেজ ও মাদ্রাসা যে এলাকায় থাকবে, সে এলাকায় এমপিওভুক্ত কলেজ-মাদ্রাসায় তো সিট ফাঁকা থাকবেই। কাম্য শিক্ষার্থীর অভাব থাকবেই। এত গেল রাজধানী শহরের কথা। সারা দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরের চিত্র কমবেশি একই রকম। প্রায় উপজেলাতেই বিদ্যমান উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ডজনাধিক কলেজ-মাদ্রাসা।

অনিয়মের প্রতিযোগিতায় নেমে অপ্রয়োজনীয় আসন ও কলেজ-মাদ্রাসা বাড়ানোর ফলে প্রতি বছর উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের যে লাখ লাখ সিট ফাঁকা থাকছে এর দায় নিশ্চয়ই শিক্ষকদের নয়। যারা অযৌক্তিকভাবে একই এলাকায় এত এত কলেজ-মাদ্রাসার অনুমোদন নিলেন ও দিলেন তারা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না এর দায়। অথচ আজ মানসম্মান বিকিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও পাওয়া পাচ্ছে না কাম্য শিক্ষার্থী। সুস্থমনে পাঠদানের স্থলে চাকরি হারানোর বা বেতন না পাওয়ার ভয়ে শিক্ষক থাকবেন তটস্থ। এভাবে কোনো দিনই নিশ্চিত হবে না সুশিক্ষা। এক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন ও এর আপসহীন বাস্তবায়ন।

লেখক :অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

https://www.ittefaq.com.bd/print-edition/opinion/189589/%E0%A6%89%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%96-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%96-%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%A8

গণপাঠ্য ছড়া: বীর বাঙালির ঐতিহ্য। যায়যায়দিন, ২১ এপ্রিল ২০১৭


 

প্রবন্ধ: শিক্ষকের আত্মতৃপ্তি কোথায়? দৈনিক ইত্তেফাক, ২৬ আগস্ট ২০২০



 

গল্প: অন্য জীবন। আজকের কাগজ, ০১ জুন ২০০৩


 

প্রবন্ধ: মতামত- পুলিশ নির্যাতন করে কেন? প্রথম আলো, ২৬ জুলাই ২০০২


 

প্রবন্ধ: উচিত কথা- কোটা সংরক্ষণ করে মেয়েদের চাকরি। নরসিংদীর কথা, ০৪ জুন ২০০২


 

প্রবন্ধ: আত্মশক্তি অর্জনই শিক্ষার উদ্দেশ্য। দৈনিক ইত্তেফাক, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১১


 

প্রবন্ধ: শিক্ষকের বঞ্চনার অবসান কতদূর? দৈনিক ইত্তেফাক, ২৬ এপ্রিল ২০১২


 

প্রবন্ধ: শিক্ষা মূল্যায়নে গ্রেডিং পদ্ধতি। যায়যায়দিন, ২২ জুন ২০১১


 

প্রবন্ধ: উচিত কথা- শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি। নরসিংদীর কথা, ২০ আগস্ট ২০০২



 

প্রবন্ধ: ঈদের আগে বেসরকারি শিক্ষকরা পাবেন কি সরকারি বেতন-ভাতা। যায়যায়দিন, ১২ আগস্ট ২০১১



ছড়া: ফল খেয়ে চাঙ্গা। যায়যায়দিন, ০৫ জুলাই ২০১১


 

প্রবন্ধ: আর পারি না, এবার বেতন বাড়ান। নরসিংদীর কথা, ২২ এপ্রিল ২০০৩


 

প্রবন্ধ: সিট বন্টন কৌশল পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস অনেকাংশে কমানো সম্ভব। দৈনিক জনকণ্ঠ, ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬


 

প্রবন্ধ: শিক্ষাক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে অব্যাহত অগ্রগতি। দৈনিক ইত্তেফাক, ০২ জুন ২০১১

 


প্রবন্ধ: রপ্তানি হতে পারে লটকন। নরসিংদীর কথা, ২৭ আগস্ট ২০০২



 

প্রবন্ধ: উচিত কথা- পৈতৃক সম্পত্তিতে নারীর অধিকার। নরসিংদীর কথা, ২১ মে ২০০২


 

প্রবন্ধ: বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি বেতন ভাতা। যায়যায়দিন, ১৫ জুলাই ২০১১




প্রবন্ধ: পৈতৃক সম্পত্তিতে নারীর অধিকার। দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১০


 প্রসঙ্গ: পৈত্রিক সম্পত্তিতে নারীর অধিকার

 অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্

দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১০

>পৈত্রিক সম্পত্তিতে নারীর অধিকার অধিকাংশ ক্ষেত্রে  অনর্জিতই থেকে যায় আমাদের দেশে। এর নানাবিধ কারণের মধ্যে সচেতনতার অভাবই প্রধান। নারীর এই অধিকার সরাসরি অস্বীকার করা হয়নি কোন ধর্মেই। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মেতো পিতা-মাতার অবর্তমানে তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তিতে মেয়ের  অধিকার হিসাব করেই দেয়া আছে; যদিও এটি ভাইয়ের প্রাপ্যাংশের তুলনায় অর্ধেক। অবশ্য পিতা/ মাতা ইচ্ছে করলে তাঁদের সম্পত্তি ছেলে মেয়েকে সমান হারেও ভাগ করে দিতে পারেন। এতে ইসলাম ধর্মে কোন নিষেধ নেই। কোন আইনেরও প্রয়োজন নেই। পরিমাণ যাই হোক মূল প্রশ্ন হচ্ছে, এই অধিকারটুকু আমাদের নারীরা অর্জন ও ভোগ করতে পারছে কিনা? যদি কেউ পেরে থাকে তো মোটের তুলনায় এটি খুবই নগণ্য। আমাদের সমাজে এমন একটি ভ্রান্ত— ধারণা প্রচলিত যে, বাপের বাড়ির সম্পত্তির অংশ মেয়েরা নিয়ে নিলে স্বামীর সংসারে অনটন নেমে আসে এবং ভাইদের সাথে বোনদের সম্পর্কের কোন সেতু বন্ধন থাকে না। বোনরা ভাইদের বাড়িতে এবং ছেলেমেয়েরা মামার বাড়িতে যাবার বা আপ্যায়ন পাবার যোগ্যতা হারায়। উচিত কথা হচ্ছে, মেয়েদেরকে স্থায়ীভাবে ঠকানোর এটি একটি চতুর কৌশল ছাড়া আর কিছুই না। ভাইয়েরা পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগাভাগি (বোনদের অংশসহ) করে ভোগ-দখল করলে যদি অভিশপ্ত না হয়, সম্পর্ক অবনতি না হয়, পরষ্পরের বংশধরদের আপ্যায়ন পাবার অধিকার থাকে, পরষ্পরের সুখে-দুঃখে এগিয়ে যাবার মানসিকতা থাকে, তো বোনদের অপরাধ কোথায়? বোনের প্রাপ্য সম্পত্তি ভাই ভোগ-দখল করবে সারাজীবন, ফুফুর সম্পত্তি ভাইপোরা ভোগ করবে জোর করে; তাতে অপরাধ হবে না, অভিশপ্ত হবে না, অথচ পিতা-মাতার সম্পত্তির বৈধ প্রাপ্যাংশ কণ্যা ভোগ-দখল করলেই অভিশপ্ত হবে, ধবংস হয়ে যাবে এ কেমন কথা, কোন ধর্মের কথা? নারীতো ভাইয়ের সম্পত্তি পায় না, পিতা-মাতার সম্পত্তি পায়। এতে ভাইয়ের রাগ করার, অভিশাপ দেয়ার বৈধতা ও যুক্তিকতা কোথায়? ভাইকে প্রাপ্যাংশ দিতে কষ্ট না থাকলে, বোনকে দিতে এত কষ্ট কেন? এ কষ্টে কি পাপ নেই?

অবাক ব্যাপার, যে বাবা মেয়েকে বেশি আদর দেখায়, পুত্র-পুত্রবধূ রেখেও মেয়ের সেবাযতœ প্রত্যাশ্যা করে মৃত্যু শয্যায়; সে বাবাই তার সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কূট-কৌশলে ছেলের দখলে দিয়ে মরে যায় বেহেশতে যাবার দোয়া করতে করতে! হজ্জও করেন কেউ কেউ! বিশেষ করে শহরের বাড়ির অংশতো কোনভাবেই দিতে চায় না মেয়েদেরকে। মেয়েদেরকে বঞ্চিত করে ছেলেদের নামে মূল্যবান বাড়ি দলিল করে দিয়ে যান, এমন নীতি-আদর্শহীন বাবার সংখ্যাও আমাদের সমাজে কম নয়। যে ভাইয়ের জন্য সবার আগে নির্দ্বিধায় প্রাণ দিতে পারে বোন; সেই ভাই-ই বোনের প্রাপ্যাংশ না দেয়ার জন্যে আঁটে নানা অবৈধ কৌশল। কোনো অধিকার সচেতন বোন তার প্রাপ্যাংশের দাবিতে আদালতের আশ্রয় নিলে, ভাই ধর্মীয় পোশাক পরে ভালো মানুষ সেজে হাজির হয় বিচারকের সামনে। কোন অসতর্ক, অসুস্থতা বা বিপদের সময় বাবার/ মার/ বোনের স্বাক্ষর/টিপসহি নিয়ে বোনকে অধিকার বঞ্চিত করে বা করার চেষ্টা করে এমন ভাইয়ের সংখ্যাও কম নয়।

সাধারণত ধনীর মেয়ের রূপ-গুণ-যোগ্যতা যতই কম থাকুক, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধনীর সঙ্গেই তার বিয়ের হয় আমাদের সমাজে। বিয়ের দেনমহরানা ধার্য হয় তুলনামূলক বেশি। অথচ ধনী পিতার সম্পত্তির প্রাপ্যাংশ যদি ঐ মেয়ে ও তার সন্তানেরা না পায়, তো তাকে অধিক মূল্যায়নের ভিত্তি কোথায়? শিক্ষিত অশিক্ষিত বেকার চাকুরে যা-ই হোক, যে মেয়ের নামে সম্পত্তি থাকে তার বিয়েতে যৌতুকের প্রশ্ন উঠে না। 

বাস্তবে আমাদের নারীরা বিভিন্ন যৌক্তিক, অযৌক্তিক ও ভ্রান্ত ধারণার কারণে পৈতিক সম্পত্তি গ্রহণ ও ভোগদখল না করে উদারতা দেখালেও, নিঃশর্তে দলিল করে ভাইকে  দিয়ে দেয় এমন নারীর সংখ্যা নেই বললেই চলে। অর্থাৎ নারীরা তার পৈতিক সম্পত্তির দাবি সত্যিকারার্থে মন থেকে ত্যাগ করে না কোন দিন। দাবি অব্যাহত রেখেই মৃত্যুবরণ করে। এই দাবির দাবিদার হয় তার সন্তানেরা। দাবি আদায় করতে গেলেই হয় বিবাদ। নারীর এই জন্মগত বৈধ দাবি না চাইতেই পূরণের দায়িত্ব ছিল যে বাবার/ ভাইয়ের অথচ পূরণ করেনি, সেই বাবা/ ভাই ইহ ও পরকালে শান্তি পাবে কোন যুক্তিতে?

কোনো নারী যদি মনে করে তার পিতা-মাতার নিকট থেকে প্রাপ্যাংশ ভাই কে বা ভাইয়ের সন্তানদেরকে দিয়ে দিবেন, তো এটি মনে রাখা উচিৎ যে, তার এই প্রাপ্য সম্পত্তির উপর নিজের সন্তানের অধিকার ও দাবিই অগ্রগণ্য। নিজের সন্তানকে বঞ্চিত করে ভাই/ ভাইয়ের সন্তানদেরকে সম্পত্তি দেয়া অনুচিৎ। ভাইয়ের অভাবের কারণে দিতে হলেও নিজের স্বামী-সন্তানের মতামত নেয়া প্রয়োজন।


বোনের প্রাপ্যাংশ বুঝিয়ে দেয়ার পরও যে ভাই বোনকে, বোনের স্বামী-সন্তানকে সাধ্যমত আদর-আপ্যায়ন করার আন্তরিক চেষ্টা করে সে ভাই-ই প্রকৃত অর্থে ভাই। সম্পত্তির দেনা-পাওনার নিস্পত্তির পর যে সম্পর্ক ও আন্তরিকতা থাকে তা-ই আসল। আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি- নরসিংদী জেলার সবুজ পাহাড় এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি  আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী মাষ্টার নিজেই তাঁর ফুফু, বোন ও কন্যাদের প্রাপ্য সম্পত্তি দলিল করে দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন। অথচ তাদের সাথে তাঁর ও তাঁর ছেলেদের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক অবনতি হয়নি। বরং অন্যদের তুলনায় তাঁদের সম্পর্ক পরষ্পরের সুখে-দুখে-আনন্দ অনুষ্ঠানে আদর-আপ্যায়নে সক্রিয়তার কোন ঘাটতি নেই। নারী বলে পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগদখল করে গরিব হয়ে যায় নি তারা কেউ। অবশ্য এক্ষেত্রে সম্পর্ক ভাল রাখার দায়িত্ব অনেকাংশে ভাই ও ভাইপোদের উপর নির্ভর করে। 

পৈত্রিক সম্পত্তিতে নারীর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হলে যাদের অবৈধ স্বার্থ ক্ষুন্ন হবে, তাদের গা জ্বালা হওয়া স্বাভাবিক। এর বিপক্ষেতারা যতই যুক্তি খোঁজুক, ফন্দি আঁটুক, পৈতিক সম্পত্তির (স্থাবর-অস্থাবর) উপর নারীর এই জন্মগত অধিকার অর্জন ও ভোগ করার জন্য মনের জোর নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে নারীকেই। নিজের ও নিজের কন্যা সন্তানদের বৈধ পাওনা বুঝে নিতে ও দিতে হবে যে কোন মূল্যে। //  

[লেখক- অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা। md.rahamotullah@gmail.com]

গল্প- বুয়া- জনকন্ঠ- ০১ নভেম্বর ২০০২

 


প্রবন্ধ: প্রাণ থাকলেই প্রাণী হওয়া যায়, মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না। ইত্তেফাক, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১


 

প্রবন্ধ: আত্মশক্তি অর্জনই শিক্ষার উদ্দেশ্য। ইত্তেফাক, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১১


 

সংবাদ: অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন। ইত্তেফাক


 

প্রবন্ধ: পুলিশ নির্যাতন করে কেন? সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ১২ জুলাই ২০০২


 

প্রতিবেদন: এখনো মে মাসের বেতন পাননি বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী। সকালের খবর, ২৯ জুন ২০১১


 

প্রবন্ধ: পরীক্ষা কিভাবে নকলমুক্ত করা যায়। সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ২৬ এপ্রিল ২০০২


 

প্রবন্ধ: নকলমুক্ত পরীক্ষা হল কিভাবে সম্ভব? সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ০৯ এপ্রিল ১৯৯৯


 

প্রবন্ধ: উচিত কথা- চাকরিতে নারী কোটা। নরসিংদীর কথা, ০৪ জুন ২০০২


 

প্রবন্ধ: কোটা সংরক্ষণ করে মেয়েদের চাকরি দেয়া মানেই জাতীয় অগ্রগতি ব্যহত করা। জনকণ্ঠ, ১৬ মে ১৯৯৪


 

প্রবন্ধ: সাম্প্রতিক বিতর্ক- ইটিভি। নরসিংদীর কথা, ০১ অক্টোবর ২০০২


 

প্রবন্ধ: সেনারা ব্যারাকে ফিরে গেলে। নরসিংদীর কথা, ১২ নভেম্বর ২০০২


 

প্রবন্ধ: বিজয়ের ৩১ বছর- গণমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। নরসিংদীর কথা, ১৭ ডিসেম্বর ২০০২


 

সংবাদ: কিশলয়ে সমাবেশ > যায়যায়দিন ১০ মে ২০১১